জিএসপি কি | গ্যাট কি | জিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়ার শর্ত

জিএসপি (GSP) এর পূর্ণরুপ?
জিএসপি এর পূর্ণরুপ হল Generalised System of Preference বা (GSP)।

জিএসপি (GSP) অর্থ কি?

জিএসপি হল জেনারেল সিস্টেম অব প্রেফারেন্স বা (GSP)।

জিএসপি (GSP) কি?

জিএসপি হল স্বল্পোন্নত দেশগুলোর জন্য পোশাক বা অন্যান্য দ্রব্য রপ্তানির ক্ষেত্রে একটি বেশি সুবিধাজনক ব্যবস্থা। যা ইউরোপিয়ান দেশগুলোতে কোটা ছাড়াও আরও একটি সুবিধাজনক পদ্ধতি তথা জিএসপি প্রথা চালু আছে। 

আর জিএসপি চালু করার মূল লক্ষ্য হল স্বল্পোন্নত দেশগুলো যাতে খুব সহজে তৈরি পোশাকসহ ও অন্য পণ্য শুল্কমুক্তভাবে রপ্তানি করতে পারে। যার ফলে অধিক মুনাফা পাওয়া যায়। জিএসপি প্রথা চালু হওয়াতে বাংলাদেশের ওভেন ও নিট গার্মেন্টস রপ্তানির পরিমাণ অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে।

জিএসপি (GSP) কাকে বলে?

সাধারণত পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে আমদানিকারক দেশসমূহ রপ্তানিকারক দেশসমূহকে পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় শর্তসমূহ শিথিল করে যে সুবিধা প্রদান করে তাকে জিএসপি (GSP) বলে।

জিএসপি গ্রহীতা দেশগুলোর নাম কি কি?

বাংলাদেশ 
পাকিস্তান
ভারত 
চীন ইত্যাদি। 

জিএসপি (GSP) দাতা দেশগুলোর নাম কি কি?

জিএসপি দাতা দেশগুলোর নাম হলঃ
  • সুইডেন
  • কানাডা
  • আমেরিকা
  •  ইংল্যান্ড
  • বেলজিয়াম
  • ডেনমার্ক
  • ইইসি দেশসমূহ ইত্যাদি। 

জিএসপির পরিমাণের শর্তাবলী?

সাধারণত জিএসপি এর কোন নির্দিষ্ট পরিমাণ থাকে না। তবে আমদানিকারক দেশসমূহ রপ্তানিকারক দেশসমূহকে বিভিন্ন পরিমাণে জিএসপি সুবিধা দিয়ে থাকে। তবে এ পরিমাণ সাধারণত শতকরা ১২.৫ ভাগ পর্যন্ত হয়ে থাকে। 

জিএসপি সুবিধা ফিরে পাওয়ার শর্ত?

আমদানিকারক দেশসমূহ বিভিন্ন শর্তে রপ্তানিকারক দেশসমূহকে জিএসপি সুবিধা প্রদান করে থাকে। বিভিন্ন দেশ ভিন্ন ভিন্ন শর্তে এই সুবিধা প্রদান করে। নিম্নে জিএসপি প্রাপ্তির কিছু শর্ত উল্লেখ করা হলঃ 
  • একটি নির্দিষ্ট দেশ হতে কাপড় আমদানি করে পোশাক তৈরি করে ঠিক ঐ দেশেই রপ্তানী করতে হবে। এক্ষেত্রে ভিন্ন কোন দেশে পোশাক রপ্তানি করা যাবে না।
  • আমদানিকৃত কাপড়ও বাজারে বিক্রি করা যাবে না।
  • তৈরিকৃত পোশাক নিজ দেশে বাজারজাতকরণ করা যাবে না। 
  • আমদানিকারক কর্তৃক প্রেরিত ট্রিমিংস পোশাকের সংযোজন করতে হবে। 
  • শ্রমিকদের সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে হবে।
  • নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পোশাক তৈরি করে তা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই বিদেশে রপ্তানি করতে হবে।

বাংলাদেশ কতটি দেশে gsp সুবিধা পাচ্ছে?

বর্তমানে বাংলাদেশ ৫২টি দেশে gsp সুবিধা পাচ্ছে।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে কবে?

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশের জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে ২০১৩ সালের জুনে। যা ২০১৩ সালের ১ সেপ্টেম্বর থেকে কার্যকর শুরু হয়। মূলত ২০১৩ সালের এপ্রিলে রানা প্লাজা ধসে সহস্রাধিক শ্রমিক নিহত হওয়ায় সে সময়ে বিশ্বব্যাপী নিন্দার ঝড় ওঠে। এর জের ধরেই ওই বছরের জুনে যুক্তরাষ্ট্র সরকার জিএসপি সুবিধা স্থগিত করে দেয়।
গ্যাট
গ্যাট

গ্যাট এর পূর্ণরুপ?

গ্যাট এর পূর্ণরুপ হচ্ছে General Agreement on Tariff and Trade বা (GATT)।

গ্যাট (Gatt) কাকে বলে?

সুষম বাণিজ্যিক বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অর্থনৈতিক পুনঃগঠনের প্রয়োজনকে গ্যাট বলে।

গ্যাট এর বর্তমান নাম কি?

গ্যাট এর বর্তমান নাম হচ্ছে WTO অর্থাৎ World Trade Organization.

গ্যাট এর অর্থ কি?

গ্যাট এর অর্থ হচ্ছে শুল্ক ও ব্যবসার চুক্তি। 

গ্যাট এর সদর দপ্তর কোথায় অবস্থিত?

সুইজারল্যান্ডের জেনেভাতে গ্যাট এর সদর দপ্তর অবস্থিত। 

গ্যাট কত সালে প্রতিষ্ঠিত হয়?

গ্যাট প্রতিষ্টিত হয় ১লা জানুয়ারি ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দে। 

গ্যাট এর প্রধান কে?

গ্যাট সংস্থার প্রধান হল ডাইরেক্টর জেনারেল বা মহাপরিচালক। 

গ্যাট এর সদস্য সংখ্যা কতটি?

গ্যাট এর সদস্য সংখ্যা ১৪৮ টি।

গ্যাট এর ইতিহাস?

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা শুরু হয়। এ মন্দাকে কাটিয়ে উঠার আগেই পুনরায় আবার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বিভীষিকা সৃষ্টি হয়। এ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্ব বাণিজ্যে ধস নামে। 

যুদ্ধবাজদের প্রভাবে সেই সময়ে অধিকাংশ দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক হারে ধস নামে, যার ফলে বাণিজ্যিের ক্ষেত্রে দেখা যায় মারাত্মক অনিয়ম ও বিশৃঙ্খলা। এ পরিস্থিতিতে সুষম বাণিজ্যিক বাজার সৃষ্টির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর অর্থনৈতিক পুনঃগঠনের প্রয়োজন হয়েছিল। 

ঠিক এসময়েই পুঁজিবাদী দেশগুলো আমেরিকার নেতৃত্বে একটি বাণিজ্য সংস্থা প্রতিষ্টার প্রস্তাব করে। তাই এ লক্ষে পুঁজিবাদী সমাজতন্ত্র রোধকল্পে এবং অর্থনৈতিক উপনিবেশ তৈরির উদ্দেশ্য ১৯৪৪ সালের জুলাই মাসে যুক্তরাষ্টের ব্রেটন উডসে মিলিত হয়। 

বেটন উডস কনফারেন্স তিনটি আন্তর্জাতিক সংস্থা প্রতিষ্টার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। আইটিও যখন প্রতিষ্টিত হতে পারল না, তখন আইটিও এর পরিবর্তে ১৯৪৭ সালে জেনেভার বিশ্ব বাণিজ্য নীতি নিয়ে বহুপাক্ষিক আলোচনার মাধ্যমে গ্যাট চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। 

সেই সময়ে ২৩টি দেশ তাতে প্রাথমিকভাবে স্বাক্ষরিত করে। এই বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ১৯৪৮ সালে ১লা জানুয়ারি গ্যাট কার্যকরী হয়েছিল।
Next Post Previous Post