পরিসর কি | পরিসর এর সুবিধা ও অসুবিধা

পরিসর (Range) কি?

তথ্যসারির সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ মানের পার্থক্যকে পরিসর বা ব্যাপ্তি বলা হয়৷ অর্থাৎ তথ্যসারির সর্বোচ্চ মান হতে যদি সর্বনিম্ন মান বিয়োগ করা হয় তবে পরিসর পাওয়া যাবে৷ যদি সাধারণ সিরিজের সর্বনিম্ন মান Xmin এবং সর্বোচ্চ মান Xmax হয় তবে পরিসর R= Xmax – Xmin
অন্যভাবে R=| min – Xmax
পরিসর
পরিসর
আবার গণসংখ্যা নিবেশনের ক্ষেত্রে সর্বপ্রথম শ্রেণির নিম্নসীমা এবং সর্বশেষ শ্রেণির উচ্চসীমার পার্থক্য হল পরিসর৷ সর্বপ্রথম শ্রেণির নিম্নসীমা I1 এবং সর্বশেষ শ্রেণির উচ্চসীমা I2 হলে R= I2-I1 অথবা R=| I1-I2 | = I2 - I1|। 

পরিসর নির্ণয়ের সূত্র (Computation of range) লেখ?

অবিন্যস্ত রাশিতথ্যমালার ক্ষেত্রে যেমনঃ 
পরিসর R= বৃহত্তম মান–ক্ষুদ্রতম মান 
যেমন নিচে উপাত্ত হতে পরিসর নির্ণয় করা হলঃ  ২১,১৩,৫০,৪২,৯,৫০ 

প্রদত্ত তথ্যের ক্ষুদ্রতম মান = ৯ 
প্রদত্ত তথ্যের বৃহত্তম মান = ৫০ 

পরিসর R= (বৃহত্তম মান–ক্ষুদ্রতম মান)
= ৫০–৯
=৪১ 

পরিসরের সুবিধা ও অসুবিধা (Advantages and Disadvantages of range) কি কি?

পরিসরের সুবিধাসমূহ কি কি? 

  • পরিসর নির্ণয় করা খুব সহজ এটা অনেক ক্ষেত্রে শ্রম ও সময় বাঁচায়৷ 
  • এটা নির্ণয় করতে হলে তথ্যমালার মাঝামাঝি কোন মান জানা প্রয়োজন পড়ে না৷ 
  • এটা বুঝা খুব সহজ এবং কোন গাণিতিক সূত্র ব্যতীত নির্ণয় করা যায়৷ 
  • এর সুষ্পষ্ট সংজ্ঞা আছে৷ 

পরিসরের অসুবিধাবলি কি কি? 

  • এটা সকল মানের উপর নির্ভরশীল নয়৷ এজন্য এটা সিরিজের গঠন সম্পর্কে ধারণা দিতে পারে না৷ 
  • এটা চরম বা প্রান্তিক মান দ্বারা বেশ প্রভাবিত হয়৷ 
  • সীমাহীন শ্রেণিব্যাপ্তি বিশিষ্ট নিবেশনের পরিসর নির্ণয় করা যায় না৷ আবার সিরিজের প্রান্তিক মান জানা না থাকলেও পরিসর নির্ণয় করা যায় না৷ 
  • এতে পরবর্তীতে কোন গাণিতিক প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা যায় না৷ 

পরিসরের ব্যবহার (Uses of range) লেখ?

পরিসর প্রতিনিধিত্বশীল বিস্তার পরিমাপক নয়৷ তাই একে ব্যবহারিক জীবনে এবং পরিসংখ্যানে ঢালাওভাবে খুব একটা ব্যবহৃত হতে দেখা যায় না৷ তবে এটা পরিগণায় সহজ এবং দ্রুত করা যায় বলে কয়েকটি বিশেষ ক্ষেত্রে এর ব্যবহার অনস্বীকার্য৷ নিম্নে এরূপ কয়েকটি ক্ষেত্রে উল্লেখ করা হলঃ 
  • শোয়ার বাজারে অনবরত শোয়ারের দাম কমে এবং বাড়ে৷ তাই শেয়ার দালালকে শেয়ার ক্রয় ও বিক্রয়ের সময়ে এর সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মূল্যের পরিসর জানা বিশেষভাবে দরকার৷ শেয়ার মূল্যের পরিসর জানা থাকলে দরকষাকষিতে তার ক্ষতির সম্ভাবনা কম থাকে৷ 
  • মুদ্রা ব্যাবসায়ী অন্যান্য পণ্য ব্যবসায়ী এমনকি সাধারণ ক্রেতাকে তাদের ব্যবসায়িক কাজকর্মে পরিসর ব্যবহার করতে হবে৷ 
  • শিল্প কারখানায় দ্রব্যের উৎকর্ষতা নিয়ন্ত্রণে ও মূল্য নির্ধারণে পরিসর ব্যবহার হয়৷ একটি নির্দিষ্ট পরিসর দ্রব্যের মান উঠানামা করলে তা গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয় আর যদি দ্রব্যমান এ পরিসর অতিক্রম করে তবে তা দ্রব্যমূল্যের সাথে অসামঞ্জস্যপূর্ণ এবং অগ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়৷ 
  • দৈনন্দিন জীবনে আবহাওয়ার পূর্বাভাস দিতে পরিসর কাজে লাগে৷ দৈনিক তাপমাত্রার বিবরণ দেয়ার সময় গড় তাপমাত্রা উল্লেখ না করে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা উল্লেখ করলেই তাপমাত্রা সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যায়৷ 
কোন তথ্যসারির পরিসর হচ্ছে উহার বৃহত্তম ও ক্ষুদ্রতম সংখ্যা দুইটির ব্যবধান৷ ইহা বিস্তার পরিমাপের একটি পরম পরিমাপ৷ যেহেতু পরম মান দ্বারা কোন রাশির সংখ্যা মান অর্থাৎ বীজগাণিতিক চিহ্নবর্জিত সংখ্যা বুঝায়৷ অতএব পরিসর ঋণাত্মক হতে পারে না৷ 

নিচে উদাহরণগুলো লক্ষ করা যাকঃ
5,12,3,17,2,20 সংখ্যাগুলির পরিসর = 20-2=18 
15,0,17,20,12,8,25 সংখ্যাগুলির পরিসর =25-0=25
-3,0,-2,-5,-6 সংখ্যাগুলির পরিসর = 0-(-6)= 0+6=6 
-5,-4,-3,-7,-8 সংখ্যাগুলির পরিসর = -3-(-8)= -3+8=5.

উপরের উদাহরণগুলোতে দেখা যাচ্ছে যে প্রত্যেক ক্ষেত্রেই পরিসর একটি ধনান্তক সংখ্যা৷ সুতরাং পরিসর ঋণাত্মক হতে পারে না৷
Next Post Previous Post