বাফার দ্রবণ কি | বাফার বাফার দ্রবণ কত প্রকার | বাফার দ্রবণের ক্রিয়া কৌশল বর্ণনা করো

বাফার দ্রবণ কাকে বলে?

যে দ্রবণে অল্প পরিমাণ অম্ল, ক্ষার কিংবা দ্রাবক যোগ করলেও দ্রবণের pH অপরিবর্তিত থাকে তাকে বাফার দ্রবণ (Buffer solution) বলা হয়। অন্যভাবে বলা যায়, যে দ্রবণে এসিড এবং ক্ষার যুক্ত করার পরেও দ্রবণের পিএইচ মানের কোন ধরনের পরিবর্তন ঘটে না, সেসকল দ্রবণকে বাফার দ্রবণ বলে। 
বাফার দ্রবণ
বাফার দ্রবণ

সাধারণত কোন দুর্বল অম্ল কিংবা ক্ষার এবং এর লবণ দিয়ে বাফার দ্রবণ তৈরি হয়ে থাকে। যেমনঃ CH₃COOH + CH₃COONa অম্লীয় বাফার ও H₂CO₃ + NaHCO₃ ক্ষারীয় বাফার। ইহা কার্বনেট বাফার কিংবা কার্বনেট-বাইকার্বনেট নামে পরিচিত। এ ধরনের দ্রবণে দ্রবীভূত এসিড এবং ক্ষারক প্রশমিত হয়ে যায়।

যার ফলে দ্রবণের pH এর মানের কোন পরিবর্তন হয় না। বাফার দ্রবণসমূহের মধ্যে নির্দিষ্ট পরিমাণ পিএইচ সীমা রয়েছে যা pH পরিবর্তনের পূর্বে কি পরিমাণ এসিড/ক্ষারকে নিরপেক্ষ করা যায় তা নির্দেশ করে থাকে।

বাফার দ্রবণ কত প্রকার ও কি কি?

বাফার দ্রবণ দুই প্রকারঃ
  • অম্লীয় বাফার ও 
  • ক্ষারীয় বাফার দ্রবণ

অম্লীয় বাফার দ্রবণ কি?

মৃদু এসিড ও ঐ এসিডের সাথে তীব্র ক্ষারকের লবণের দ্রবণ মিশ্রিত বাফার দ্রবণকে অম্লীয় বাফার দ্রবণ বলা হয়।

ক্ষারীয় বাফার দ্রবণ কি?

কখনো কখনো মৃদু ক্ষারের সাথে তীব্র এসিড ও ঐ মৃদু ক্ষারের লবণের দ্রবণ মিশিয়ে বাফার দ্রবণ তৈরি করা হয়। আর এ ধরনের দ্রবণকে ক্ষারীয় বাফার দ্রবণ বলা হয়।

বাফার দ্রবণ কিভাবে কাজ করে?

বহু রাসায়নিক ও জীববিদ্যা সম্পর্কীয় প্রক্রিয়ার জন্য পিএইচ স্থির রাখা প্রয়োজন। আর এ উদ্দেশ্যে এমন দ্রবণের প্রয়োজন যা স্থির পিএইচ রক্ষা করতে পারে। সাধারণভাবে দ্রবণের সামান্য একটু এসিড বা ক্ষার যোগ করলে দ্রবণের পিএইচ পরিবর্তিত হয়ে যায়। কিন্তু এমন দ্রবণ ও তৈরি করা যায়, যার পিএইচ সামান্য পরিমাণ এসিড বা ক্ষার যোগ করলে অপরিবর্তিত থাকে, এমনকি পানি যোগে লঘু করলেও পিএইচ একই থাকে। 

যে দ্রবণের সামান্য পরিমাণ এসিড বা ক্ষার যোগ করলেও দ্রবণের পিএইচ মান অপরিবর্তিত থাকে, ঐ দ্রবণকে বাফার দ্রবণ বলে। বাফার দ্রবণের তার পিএস পরিবর্তনে বাধা দেওয়ার ধর্মকে তার বাফার ক্রিয়া বলে। বাফার দ্রবণ সাধারণত একটি দুর্বল এসিড এবং লবণ মিশ্রিত করে প্রস্তুত করা হয়। যেমনঃ অ্যাসিটিক এসিড (CH3COOH) এবং সোডিয়াম এসিটেট (CH3COONa) পানিতে দ্রবীভূত করে বাফার দ্রবণ প্রস্তুত করা হয়। 

আবার মৃদু ক্ষারক ও তার কোন দ্রবণীয় লবণ যেমনঃ অ্যামোনিয়াম হাইড্রোক্সাইড (NH4OH) অ্যামোনিয়াম ক্লোরাইড (NH4CL) এর মিশ্রণ দ্বারাও প্রস্তুত করা যায়। তবে এসিটিক এসিড ও সোডিয়াম এসিটেট দ্বারা তৈরি বাফার দ্রবণ সর্বাধিক ব্যবহার করা হয়। 
Next Post Previous Post