প্রিট্রিটমেন্ট কি | প্রিট্রিটমেন্টের প্রয়োজনীয়তা | প্রিট্রিটমেন্ট প্রসেস

প্রিট্রিটমেন্ট কি?

টেক্সটাইল দ্রব্যকে রং ও ছাপার উপযোগীকরণের প্রক্রিয়াগুলোই হল প্রিটিটমেন্ট।

প্রিট্রিটমেন্টের প্রয়োজনীয়তা?

রং ও ছাপার পূর্ব পর্যন্ত যে কাজগুলো করা হয় সে কাজগুলোর প্রয়োজনীয়তাই প্রিট্রিটমেন্টের প্রয়োজনীয়তা। নিম্নে প্রিট্রিটমেন্টের কয়েকটি প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করা হলঃ
  • শিয়ারিং বা ক্রোপিং এর মাধ্যমে গ্রে কাপড়ের পৃষ্ঠে লেগে থাকা ছেঁড়া সুতা দূর করা।
  • কাপড়ের স্টার্চ জাতীয় পদার্থকে দূর করা।
  • কাপড়ের গায়ে লেগে থাকা অপ্রয়োজনীয় সুতা বা আঁশগুলো সিনজিং এর মাধ্যমে পুড়ে দূর করা।
  • গ্রে কাপড়ের পৃষ্ঠে লেগে থাকা ধুলাবালি, ক্ষুদ্র আঁশ দূর করা এবং প্রজেক্টিং ফাইবার দাঁড় করানো।
  • কাপড় হতে তেল, চর্বি, মোম, গ্রিজ ও অন্যান্য অপদ্রব্য দূর করা।
  • টেক্সটাইল দ্রব্যের শক্তি, উজ্জ্বলতা ও আকর্ষণ মার্সেরাইজিং প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বৃদ্ধি করা। 
  • কাপড় থেকে অপদ্রব্য ও অতিরিক্ত কেমিক্যাল দূর করা।
  • থার্মোপ্লাস্টিক ফাইবারের কাপড়কে উচ্চতাপ সহনীয় করার জন্য হিট সেটিং করা।
  • টেক্সটাইল দ্রব্যে অবস্থিত অ্যালকালি ও অ্যাসিড প্রশমিত করে ব্যবহার উপযোগী করা।
  • গ্রে কাপড়ের প্রাকৃতিক রং দূর করে সাদা করা ও রং শোষণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করা। 

প্রিট্রিটমেন্ট প্রসেস? 

নীট এবং ওভেন ডাইং এর প্রিট্রিটমেন্ট বা ব্যাক প্রসেসঃ
প্রিট্রিটমেন্ট করা হয় ডাইং এর আগে ফেব্রিকের প্রাকৃতিক ইয়োলিশ বা গ্রে কালার দূর করার জন্য। প্রিট্রিটমেন্টের M:L রেসিও কমিয়ে রাখা হয় ডাইং এর তুলনায় ১:৬  এ করা হয়।

প্রিট্রিটমেন্ট এর আওতায় পড়ে স্কাওরিং, ব্লিচিং ও মার্সেরাইজিং। প্রিট্রিটমেন্ট মিডিয়ার অ্যালকালীর PH ১১-১২। প্রিট্রিটমেন্টের কেমিক্যাল হল ওয়েটিং এজেন্ট + সিকুইস্টারিং এজেন্ট + কস্টিক + পার অক্সাইড + ওয়েল রিমুভার ইত্যাদি। 
প্রিট্রিটমেন্ট
প্রিট্রিটমেন্ট
প্রিট্রিটমেন্টের তাপমাত্রা হল বয়েলিং টেম্পারেচার৷ তাপমাত্রা ৮০ ডিগ্রী দিলে সময় লাগে ১ ঘন্টা। আর ১২০ ডিগ্রী  দিলে আপনি ২০ মিনিটে প্রিট্রিটমেন্ট করতে পারবেন। এখানে পার অক্সাইড ন্যাচারাল কালার দুর করে এবং কস্টিক ফ্যাট অয়েল দুর করে, লিকুইড ডিটারজেন্ট ওয়াক্স দুর করে এছাড়াও অয়েল রিমুভার অয়েল দুর করে।

প্রিট্রিটমেন্টের কেমিক্যাল ডজিং এর নিয়ম?

আগে ওয়েটিং ও সিকুইস্টারিং এজেন্ট লোড করে এরপর ফেব্রিক লোড কর। এরপর কস্টিক আর ডিটারজেন্ট দিতে হবে। এগুলো দেওয়ার পর কিছুক্ষন রান দিয়ে তাপমাত্রা ৭০ এ তুলে ঠান্ডা পানিতে পার অক্সাইড দিয়ে মেশিনে ডজিং করবেন। 

সর্বশেষে ২০ মিনিট রান করে কাপড় হট ওয়াশ করে পরের প্রসেসের জন্য তৈরি করুন। এ প্রসেসের কিছু সতর্কতাঃ কেমিক্যাল গুলোর মাঝে পার অক্সাইড ঠান্ডা পানিতে মেশাবেন। কারণ হল গরম পানিতে পার অক্সাইডের বিস্ফারণ ঘটবে।
 
ফ্লোরে দেখে থাকবেন থিউরির M:L এর পরিমাণ কমিয়ে মেশিন অপারেটররা পানি নেয়। এর কারণ হচ্ছে লিকার এর ডেনসিটি কম হলে স্কাওয়ারিং ভাল হয়।

প্রিট্রিটমেন্টের কোয়ালিটি টেস্টিং?

স্কাওরিং এর জন্য এব্জরবেন্সি ও ড্রপ টেস্ট করা হয়। ব্লিচিং এর জন্য ফেব্রিকের হোয়াইটনেস টেস্ট করতে হয়। সাধারণত ডার্ক কালারের জন্য ব্লিচ না করলেও চলে। শুধু স্কাওয়ারিং করতে হয়। লাইট কালার জন্য ব্লিচ এবং স্কাওয়ারিং উভয় করতে হয়। 

ওভেনের ক্ষেত্রে ব্লিচ এর পর মার্সারাইজেশন করা হয়। ব্লিচিং কেমিক্যাল পার অক্সাইডের সাথে স্টেবিলাইজার দিতে হবে এবং তা দিতে হবে হাইড্রোজেন পার অক্সাইড এর ৩:১ আনুপাতিক হারে এবং তা ডজিং করতে হবে পার অক্সাইড এর পূর্বে।

কাপড়ের হোয়াইটনেস বাড়াতে পার অক্সাইড বাড়িয়ে দিতে হবে। গ্রে ইন্সপেকশনের সময় কাপড়ে যদি অয়েল স্পট থাকে। তবে প্রিট্রিটমেন্টের সময় অয়েল রিমুভার ব্যবহার করতে হবে। তা না হলে উক্ত স্থানে কালার ধরবে না। অয়েল রিমুভার দিতে হবে তাপমাত্রা ৮০ ডিগ্রীতে উঠার পর। 

ইদানীং বায়ো স্কাওয়ারিং করা হয় ফেব্রিককের মধ্যে এনজাইম পেকটিনেজে। ওভেন ফেব্রিক ব্লিচিং এর আগে ডিসাইজিং করে নিতে হবে। এরপর ওভেন কাপড় ব্লিচিং ও স্কাওয়রিং হয় কন্টিনিউয়াস ব্লিচিং মেশিনে। নীট কাপড় ব্লিচিং হয় এক্সোস্ট মেথোডে এটমস্পিয়ারিক মেশিন বা হাই প্রেশার মেশিনে করা হয়। 

হাইড্রোজেন পার অক্সাইডকে ইউনিভারসাল ব্লিচিং এজেন্ট বলা। কারণ এটি দিয়ে সব ধরনের ফাইবার ব্লিচ করা যায়। আর ফাইবার তেমন ডেমেজ হয় না। তাছাড়া পলিস্টার কাপড়কে শুধু স্কাওয়রিং করা হয়। ব্লিচিং করা হয় না। 

নীট কাপড় ব্লিচিং এর পর পারক্সাইড কিলার ব্যবহার করা হয়। কিন্ত পার অক্সাইড দিয়ে ট্রিট করা লাগে না। প্রিট্রিটমেন্টের রিয়েকশন/মেথোড হল স্কাওয়ারিং ও সেফোনিফিকেন এবং ইমালসিফিকেশন রিয়েকশনের মাধ্যমে হয়।
Next Post Previous Post